শ্রীমৎ অক্ষরব্রহ্ম গুণাতীত স্বামী ১৭৮৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জন্মানোর পর এর নাম রাখা হয়েছিল মূলজি, পরবর্তীকালে তিনি যখন স্বামী দীক্ষা নেন তখন এনার নাম রাখা হয় গুণাতীত। ইনি স্বামী নারায়ণের প্রিয় সন্ন্যাসী ছিলেন। ইনি আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জন ও পার্থিব আনন্দ ত্যাগের জন্য কিছু পরামর্শ তার শিশুদের প্রদান করতেন। অবশেষে ইনি ১৮৬৭ সালের অক্টোবর মাসে ভারতের গুজরাটেই মারা গিয়েছিলেন। এনার দেওয়া কিছু পরামর্শ নিচে উল্লেখ করা হলো।-
“সমস্ত আনন্দের উৎস হলেন ভগবান, সেই আনন্দে জাগো…. ভোগ্য বস্তুকে আনন্দের উৎস মনে করা অজ্ঞানতা। এমনভাবে চিত্তবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করো যাতে অতীব তৃপ্তিকর ভোগ্যবস্তু দেখেও মন তাতে আসক্ত হবে না।”
“সাধারণ জীব তো ক্রীতদাস-এর মতো নিজের শরীরের সেবাতেই মগ্ন থাকে। তারা যদি তোমার প্রতি অবাঞ্ছিত ব্যবহারও করে, অচঞ্চল চিত্তে থাকবে এই চিন্তা করে যে, প্রভুর ইচ্ছা ছাড়া একটি শুকনো পাতা পর্যন্ত সরানো যায় না।…..ইন্দ্ৰিয়ভোগে পর্যন্ত জীবের স্বাতন্ত্র্য নেই। সে ততটুকুই আস্বাদন করতে পারে কর্মফলদাতারূপী ভগবান তাকে যতটুকু ভোগ করতে দেন। ……ভগবানের কৃপাদৃষ্টিতেই অবিদ্যা মায়ার বন্ধন ধ্বংস হয়ে যায়।”
“অনেক কষ্টের পর আমরা মনুষ্যজন্ম লাভ করে থাকি। তাই মনুষ্যজন্মের প্রতিটি মুহূর্তকে ঈশ্বর অন্বেষায় নিযুক্ত করা উচিত। শুধুমাত্র বিষয়ের প্রতি চিন্তা করে মনুষ্য জন্ম কাটিয়ে দিলে পরে অনুশোচনার অন্ত থাকবে না।”
“শুভ অশুভ উভয় প্রকার সমস্যার সামনে তোমাকে দাঁড়াতে হবে। তবে কৃষ্ণভক্তি থাকলে এবং ঈশ্বরের প্রতি অসীম আনুগত্য থাকলে তুমি সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে পারবে।”
“স্বপ্নে জাগরণে সুষুপ্তিতে নিদ্রায়, সর্বদা তাঁর নাম স্মরণ করবে। তাঁকে চিন্তা করবে, তবেই তোমার মধ্যে একধরনের ঐশ্বীশক্তির নের ঐশীশক্তির উদয় হবে।”
“মনে রাখবে, এই পৃথিবীতে তুমি স্বাধীনভাবে কোনো কিছু করতে পারো না সব কিছুই তাঁর ইচ্ছাধীন, তিনিই চালিকাশক্তি। তিনি যেমন বলবেন, আমরা সেইমতো চলব।”
“মনে সুখ দুঃখ-দুই-ই থাকবে, এই দু’ধরনের উপলব্ধি নিয়েই আমাদের চলতে হবে।”
“দেহের মৃত্যু হয়, কিন্তু যিনি দেহাতীত অবস্থায় উপনীত হতে পারেন, তাঁর কোনো মৃত্যু নেই।”
“প্রথমে ছোটো ছোটো কাজ করবে, ধীরে ধীরে সেই ছোটো কাজগুলি বড়ো আকার ধারণ করবে। তোমার ভেতর যে অসম্ভব শক্তি লুকিয়ে আছে, তুমি তার পরিচয় পেয়ে অবাক হয়ে যাবে।”