সত্যেন্দ্রনাথ রায় উনবিংশ শতকে ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। উনি ছিলেন একজন লেখক এবং সাহিত্যিক। এনার অনেক লেখা বর্তমানে চলচ্চিত্র হিসেবেও স্থান পেয়েছে। এনার কিছু মুখ দ্বারা উচ্চারিত উপদেশ নিচে উল্লেখ করা হলো।
“ভাষা তো সমাজেরই দান। অন্যদিকে মানুষ যেমন ভাষাকে সৃষ্টি করে ভাষাও তেমনি মানুষকে অনেকখানি তৈরি করে, এবং সে-ও পরোক্ষভাবে সমাজেরই তৈরি করা।”
“উপন্যাস যখন মানুষের ছবি, তখন অবধারিত ভাবেই তা সমাজেরও ছবি। এ হল উপন্যাসের এক দিকের সত্য। আবার এ-ও ঠিক যে উপন্যাস তখনই জন্মেছে যখন মানুষ ব্যক্তি হয়ে উঠেছে, তার আগে নয়। এখানে ব্যক্তি কথাটার একটা তাৎপর্য আছে। ব্যক্তি সব সময়ই আত্মসচেতন। ব্যক্তি-মানুষ নিজেকে অন্য সব কিছুর বাইরে রেখে দেখে। সেইজন্যে ব্যক্তিমানুষের বুকের মধ্যে সব সময় একটা একাকিত্বের কুঠুরি থাকে। উপন্যাস যখন ব্যক্তিমানুষের ছবি, মানুষের একলা মনেরও ছবি। উপন্যাস মানুষের যৌথতা আর একাকিত্ব মিলেমিশে থাকে। যে-কোনো একটায় যদি ঘাটতি পড়ে, মানুষের আধখানা বাদ পড়ে। কিন্তু আসলে সবটাই মিথ্যে হয়ে যায়। কেবল যৌথতা থাকলে, ঘটনা থাকে, কিন্তু আত্মসচেতনতা থাকে না, তাই গভীরতাও থাকে না।”
“উপন্যাস হল সমাজ মধ্যগত মানুষের প্রতিকৃতি, যে মানুষ একই সঙ্গে সমাজসচেতন এবং আত্মচেতন। আর একটু ভিন্নভাবে বললে বলা যায় উপন্যাস কল্পনার সাহায্যে গড়া এমন একটি মায়া-জগৎ, যা মায়া হয়েও সত্য, সুগঠিত সত্য।”