শ্রীমৎ মুথুস্বামী দীক্ষিত ভারতের বর্তমান তামিলনাড়ু রাজ্যে ১৯৭৬ সালের মার্চ মাসে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। ইনি একদিকে যেমন ছিলেন কবি অপরদিকে ছিলেন একজন সংগীত শিল্পী। আমি অনেক কবিতা ও স্লোক রচনা করেছিলেন। অবশেষে ইনি ১৮৩৫ সালের অক্টোবর মাসে মারা যান। এনার কিছু বাণী নিচে উল্লেখ করা হলো।-
“সমগ্র জগৎ হলো জগন্মাতা দেবী কমলার লীলা; তিনিই সেই চিন্তামণি নারায়নী; যাঁর পালনী-কৃপায় ভক্তগণ বরপ্রাপ্ত হয়”
“ব্রহ্মাণী দেবী সরস্বতী রূপের মধ্য দিয়ে অদ্বিতীয়া জগন্মাতার ‘শব্দব্রহ্ম’ প্রকাশটি সূচিত হয়। তাঁর দ্বারাই মহাবিশ্বের প্রসারণ ও সংকোচন রূপ সৃষ্টি কার্য সংঘটিত হয়।”
“মানব জন্ম লাভ করলে নিজের (ব্রহ্মানন্দ স্বরূপ) আত্মাকে উপলব্ধির জন্য সচেষ্ট হওয়া পরম কর্তব্য। ভগবানের নামাশ্রয়ে, তার প্রতি শরণাগত হয়ে চেতনার ভ্রান্তিরূপ (অহং) আবরণ ছিন্ন করো শ্রবণ-মনন-নিদিধ্যাসনের সাধনায় তাঁকে নিজের মধ্যে অভিন্নবোধে সমাধিতে উপলব্ধি করতে পারবে।”
“আত্মা সর্বগত হয়েও সর্বত্র প্রকাশিত হয় না। যিনি নির্মল বুদ্ধি এবং বোধের অধিকারী, সেখানেই তিনি প্রকটিত হন।”
“ইন্দ্রিয়সমূহকে বশীভূত করতে হবে, না হলে তুমি কখনোই যোগশিক্ষায় সিদ্ধিলাভ করতে পারবে না। প্রথমে ইন্দ্রিয় উৎপন্ন চিত্তবিকৃতিগুলিকে নিজের অধীনে রাখার চেষ্টা করো। ধীরে ধীরে আত্মচিন্তায় নিযুক্ত থাকবে। তখন তুমি তন্ময়ত্ব বোধে উদ্বুদ্ধ হবে।”
“সংসারী মানুষ জন্মের মুহূর্ত থেকে বিভিন্ন প্রকার সুখে আসক্ত। সংসার ছাড়া অন্য কোনো সুখের সামগ্রী সে কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। কিন্তু সে জানে না যে এই সুখের সংসার একদিন তাকে পরিত্যাগ গরতে হবে।”
“ভক্তের সাধনা লোক দেখাবার জিনিস নয়। সকলের সামনে লোক দেখিয়ে সাধনা করলে, সে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করা সম্ভব হয় না। নির্জনে একাকী ধ্যানমগ্ন অবস্থায় সাধনা করবে।”
“পৃথিবীতে দুটি শক্তি সব সময় ক্রিয়া করছে—একটি পুরুষ শক্তি, আর একটি স্ত্রী শক্তি। পুরুষ শক্তি শিবের মতো শবপ্রায় আর স্ত্রী শক্তি জগত সৃষ্টি করছেন।”
“ভালোবাসা কীভাবে তার পূর্ণ পরিণতির দিকে অগ্রসর হতে পারে? এক বাঞ্ছিতকে চিন্তাকরে প্রবৃত্তি মার্গের দ্বারা আমরা আমাদের পরজন্মে নিয়ে যায়। ধর্ম ছাড়লে মানুষের সম্পদ বলতে কিছুই থাকে না।”
“এই পৃথিবীতে সবথেকে দুর্লভ উপলব্ধি হচ্ছে ভক্তির উপলব্ধি। ভক্তি না থাকলে আমরা ঈশ্বরের সাধনায় সিদ্ধিলাভ করতে পারি না।”
“কামনা, ধন, কর্তৃত্ব, প্রভুত্ব, অহংকার ইত্যাদি হল এক ধরনের মোহ। যদি এগুলি আয়ত্ত করার জন্য জীবের সমস্ত সময় কেটে যায়, তাহলে কখন পরমার্থের সাধনা করবে?”