ত্রৈলঙ্গ স্বামী ১৬০৭ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের বিজয়নগরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেইসব অবস্থায় তিনি শিবরাম নামে পরিচিতি ছিলেন। ইনি অদ্বৈত বেদান্তে বিশ্বাসী একজন ব্যক্তি ছিলেন। ইনি একজন হিন্দু যোগী ও সন্ন্যাসী ছিলেন। অবশেষে এনে ১৮৮৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের বারানসিতে শেষ জীবন ত্যাগ করেছিলেন। ইনি ২৮০ বছর বয়স পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। এনার কিছু উপদেশ নিচে উল্লেখ করা হলো।
” যা দ্বারা চিত্ত শুদ্ধ, উন্নত ও নির্মল হয়, তারই নাম ঈশ্বর উপাসনা। যেমন অপরিষ্কৃত দর্পণে কোনো প্রতিবিম্ব স্পষ্ট পড়তে পারে না। সেই রকম চিত্ত নির্মল না হলে ঈশ্বরের জ্যোতিঃ (শুদ্ধ আত্মবোধ) প্রতিবিম্বিত হয় না।”
” কামনাশূন্য হয়ে যিনি যোগাভ্যাস করেন তিনিই সমাধিস্থ বা মুক্ত হওয়ার যোগ্য।….যোগশিক্ষার জন্য অরণ্যবাস তথা উপবাস করতে হয় না। চিত্তবৃত্তির নিরোধের নাম যোগ। …একাগ্রতা যোগের প্রাণ ; এই একাগ্ৰতা নিবন্ধন যখন জীবাত্মা ও পরমাত্মা একীভূত হবে জীবাত্মা ও পরমাত্মায় কোন ভেদ থাকবে না। তখনই প্রকৃত যোগী (বা যোগযুক্ত) হবে।”
“প্রকৃতভাবে দেখলে বোঝা যায় মোক্ষ মনেরই হয়ে থাকে। (সংযমনে) প্রাণশক্তির নিরোধ হলে মনের নাশ হয়, কারণ মন প্রাণেরই রূপান্তর মাত্র।… প্ৰাণই নিজ স্পন্দনশক্তি সাহায্যে অনুভব করার দশায় “মন” সংজ্ঞায় অভিহিত হয়। মনই কর্মফল ভোগ করে। মনেরই সুখ–দুঃখ হয়ে থাকে। মনের যেমন বাসনা হয়, তদনুযায়ী কাজে ফল ‘অনুভব হয়।…যেমন স্পন্দন ছাড়া বায়ুর সত্তা উপলব্ধি হয় না। তেমন চঞ্চলতা ছাড়া মনের অস্তিত্ব জানা যায় না। ভাবনাগ্রস্ত অস্থির মনকে বিবেক দ্বারা বলপূর্বক উদ্ধার করতে হয়।”
“চিন্তা চিরকালই অস্থির। একের পর এক চিন্তা কোথা থেকে আসে তার কিছু ঠিক নেই। সেইজন্য চিন্তার শেষ নেই। চিন্তার সব বিষয়েই আসক্তি থাকে। চিন্তাকে ছেদন করা দুঃসাধ্য হলেও জ্ঞানীগণ বিবেকরূপ শানিত খড়্গ দ্বারা তাকে ছেদন করেন। যাবৎ তত্ত্বজ্ঞানের উদয় হয়, তাবৎ চিন্তা যেতে পারে না। চিন্তার শান্তি না হলে তত্ত্বজ্ঞানে স্থিতি হয় না।”
“কেবল আহার, বিহার ও বিষয় সম্ভোগ করবার জন্য মানুষের সৃষ্টি হয়নি…….. ভগবান মানুষকে সকল জীবের শ্রেষ্ঠ করেছেন। …যার থেকে এই পৃথিবী, এবং কাজ করার, কথা বোঝাবার ও চলবার শক্তি পেয়েছি, যিনি নিয়ত আমাদের সঙ্গে সঙ্গে রয়েছেন তাঁকে জানবার বা দেখবার ইচ্ছা…যদি কখনো কারো হয় তবে……যে অন্তরের সঙ্গে তাঁকে পাওয়ার চেষ্টা করবে সে নিশ্চয়ই পাবে।”
“যে রকম ‘মেঘ—জনক’ ধূমের ঊর্ধ্বগতিতে গগনতল মলিন হয় না, সেই রকম আত্মা প্রকৃতি–বিকারেও লিপ্ত হন না।”
“ধর্মের মূল হৃদয়, মন ও শক্তির সঙ্গে ভগবান ভক্তি এবং বিশ্বাস। আত্মীয়, প্রতিবেশী তথা সমগ্র জগৎকে আপনার জ্ঞান হওয়া জ্ঞানতঃ কোনো অন্যায় না করা, জীবে দয়া, অহিংসা, লোভ—সংবরণ, ক্রোধ—সংবরণ, সত্যবাদিতা, ক্ষমা, সৎ–সংসর্গ, জিতেন্দ্রিয়তা, শৌচ ও গুরুভক্তি আদি সচেতনতাই ধর্ম।…ধর্মলাভে বহুশাস্ত্র অধ্যয়ন কেবল আসল কথাগুলি জানলেই কার্যসিদ্ধি হয়।”
“সংসারী মানুষ জন্মাবধি সুখে আসক্ত, কেন না সংসার ভিন্ন আর কোনো সুখের সামগ্রী সে দেখেনি। এই সুখের সংসার একদিন পরিত্যাগ করতে হবে—এই কথা ভাবলেই তাকে চিত্তাসাগরে মগ্ন হতে হয়। অথচ সংসারের দাস হয়ে নিজেকে সে সুখী মনে করে, মোহনিদ্রায় ডুবে থাকে ।”
“ইন্দ্রিয়সমূহকে মনের বশীভূত করা যোগশিক্ষার প্রধান উপায়। প্রথমে ইন্দ্ৰিয়—উৎপন্ন চিত্তবৃত্তিসমূহকে সংযত ও বশীভূত করতে হবে পরে কামনাশূন্য চিত্তে বিবিধ চিন্তা হতে (মনকে) ক্রমে ক্রমে সংহত করে সর্বদা আত্মচিন্তায় নিযুক্ত করতে হবে। তন্ময়ত্ব যোগের একটি প্রধান অঙ্গ ও যোগের ফলস্বরূপ। তন্ময়তা উপস্থিত হলে আর কোনো অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না। তন্ময়ত্বে হৃদয়ে কেবল সেই একমাত্র কাম্যবস্তুর অস্তিত্বই উপলব্ধ হয়। মন ও অভীষ্ট বস্তুর মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে তখন সে জগতে থেকেও জগৎবাসী নয়।”
“ধ্যান, ধ্যাতা ও ধ্যেয় এই ত্রিবিধ ভাবরহিত পরমাত্মা ও জীবাত্মার যে অভিন্নবোধ, যা দ্বন্দ্বাতীত বিশুদ্ধ চৈতন্যবোধক পরমানন্দস্বরূপ তাকে সমাধি বলে।… ধ্যাতা ও ধ্যানভাব ত্যাগপূর্বক বাক্যহীন স্থানে দীপের মতো বিশুদ্ধ ধ্যেয়বোধে জীবচিত্তের মিলিত তন্ময় দশাই সমাধি। …দেহাদিতে অহংভাব রহিত হয়ে ধ্যানের অভ্যাসের একাগ্রতা থেকে উৎপন্ন ব্রহ্মাকার মনোবৃত্তি প্রবাহকে ‘সম্প্ৰজ্ঞাত সমাধি’ বলে।”
“যে শক্তির দ্বারা আমাদের উন্নতি হয়, আমরা মুক্তির দিকে অগ্রসর হই সেই শক্তিই আমাদের গুরু।”
“চিত্তবৃত্তিরহিত পরমানন্দপ্রদ দশাকে যোগীগণের প্রিয় ‘অসম্প্রজ্ঞাত সমাধি’ বলা হয়। …. স্বরূপের অনুভূতিরূপ রসের আবেশে দৃশ্যানুবিদ্ধ, শব্দানুবিদ্ধ ‘সবিকল্প’ সমাধিকেও উপেক্ষা করে যোগী তখন উত্তরণ লাভ করেন, তখনই তাঁর (বায়ুহীন স্থানে দীপের মতো) স্থির ‘নির্বিকল্প সমাধি’ হয়।”
“অসন্তুষ্ট ব্যক্তি কাউকেই সন্তুষ্ট করতে পারে না, মননশূন্য মনে রিপুরা আশ্রয় নেয়। সংসার ধর্মাধর্মের পরীক্ষার স্থান— সাবধানে কাজ করবে। গর্বিত হবে না। যে ব্যক্তি শাস্ত্রের মর্ম জেনেও পালন করে না, সে পাপী হতেও অধম। যে কোনো কাজ করার মূলে ধর্মবোধ রাখবে। কাউকে হিংসা করবে না। কাম উপভোগ চিন্তা করবে না।….আলস্য পরিত্যাগ করবে। কর্কশ কথা বলবে না। জিহ্বাকে সংযত করবে। অন্যকে যে উপদেশ দেবে, আগে নিজে তা পালন করবে।”
“মানুষ অনিত্য সংসার সুখে মজে থাকে, নিজ (চেতনার) উন্নতির দিকে একবারও লক্ষ্য করে না। ভগবান এই মনুষ্যদেহ সৃষ্টি করে নিজে তার ভেতর বিরাজ করছেন। প্রত্যেক মানুষেই ঐশী শক্তি ওতপ্রোতভাবে বর্তমান রয়েছে। অনিত্য সংসারের জন্য মানুষ যেরূপ পরিশ্রম করে থাকে তার শতাংশের একাংশও ভগবানের জন্য খাটলে তাঁকে লাভ করতে পারে।”
“…. যে কোনো বস্তু দৃশ্য বা শ্রুত হয় তা ব্রহ্ম ভিন্ন নয় …জ্ঞানোদয় হলে সেই সমস্ত বস্তুকে অদ্বিতীয় সচ্চিদানন্দ ব্রহ্ম ভিন্ন অন্য কিছু বোধ হয় না।”
“এক ব্রহ্ম হতে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি অসংখ্য জীব পূর্বে কতই জন্মেছে, এখনো জন্মাচ্ছে, পরেও জন্মাবে। কেউ কেউ একবার জন্মেছে, কেউ কেউ এক্ষুণি উৎপন্ন মা হয়েছে, কেউ কেউ বারংবার জন্মেছে……কারো মুক্তি লাভের অনেক বিলম্ব… কেউ বা দেবভাব প্রাপ্ত হচ্ছে. ….কেউ কেউ “কৈবল্য” প্রাপ্ত হয়েছে।”
“আমি স্বাধীন কিসে ? …মনুষ্যমাত্রেই সম্পূর্ণ তাঁরই অধীন। মনুষ্যের শক্তি ইচ্ছায় হোক্ আর অনিচ্ছায় হোক, সেই মহতী অনন্তশক্তির অধীন।”
“প্রকৃত মনুষ্যত্ব লাভ করতে হলে ইন্দ্রিয়গুলির বেগ সম্বরণ করতে হয়। রিপুগুলির বশীকরণ, অন্তঃকরণকে বিশুদ্ধকরণ, অভিমান ত্যাগ, সর্বভূতে সমদর্শন ইত্যাদি (দিব্যায়িত) মনুষ্যত্ব লাভের প্রধান উপাদান।”
“মনের স্থূলতায় ঈশ্বরের স্থূলভাব, মনের সূক্ষ্মতায় ঈশ্বরের সূক্ষ্মভাব ও মনের বিলয়ে ঈশ্বরের স্বরূপভাব উপলব্ধি হয়ে থাকে। মন থাকতে কেউ নিরাকার বা নির্গুণ ধারণা করতে পারে না। ভাবস্ফুরণের সঙ্গে সঙ্গে ভাবময় ভগবানের বিবিধ মূর্তির বিকাশ হতে থাকে।”
” ‘আমি কর্তা নয়,’ ‘কোনো বস্তু আমার নয়’–এইরূপ জ্ঞান হলে জীব কর্মে বদ্ধ হয় না।”
” সাধক নির্জনে শরীর, মস্তক ও গ্রীবা সমভাবে রাখবে…… সরলভাবে আসনে উপবেশন করবে। তারপর নয়ন মুদ্রিত করে, নাসিকাগ্র অর্থাৎ দুই ভ্রুর মধ্যস্থলে দৃষ্টি স্থাপন করে শান্ত ও স্থিরভাবে মনে মনে গুরুদত্ত বীজমন্ত্র জপ করবে। …চঞ্চল মন বাইরে গেলেই পুনরায় তাকে অন্তর্মুখী করবে। ক্রমে মন আপন বশে আসবে। মন দিয়েই মনকে বশ করবে। …দৃঢ় হয়ে চেষ্টা করলে নিশ্চয় ফল পাওয়া যায়। মনস্থির না হলে কোনোপ্রকার সাধনা হতে পারে না। ‘আমি পারবো না, আমার হবে না।’— ভুলক্রমেও এ ভাব মনে করবে না।……সর্বদা মনে করবে ‘এই কাজ আমাকে করতেই হবে। যতদিন না হবে, ছাড়বো না।’….মনস্থির হলে আর আসনের দরকার করে না।”
” জীব যে পর্যন্ত সর্ব প্রাণীতে অবস্থিত “তাকে” আপন হৃদয় মধ্যে জানতে না পারে, সে পর্যন্ত স্বকর্মে রত হয়ে উপাসনা বা জপ করবে।’
“সত্ত্ব, রজঃ তমঃ গুণবিশিষ্ট মায়ার দুই শক্তি। প্রথমটা (তামসিক) আবরণ, যার দ্বারা জীববোধ নিত্যসত্য পরমাত্মা—বোধ হারিয়ে নিজেকে ‘অহং’-কার বোধে স্বতন্ত্র মনে করে। অপরটি (রাজসিক) বিক্ষেপ, যার দ্বারা জীব · অসত্য বস্তুতে সত্যারোপ করে জগৎকে নিত্যসত্য মনে করে এবং অনিত্য বিষয়বস্তুতে আবদ্ধ হয়ে যায়।”
“জীবের সুকৃতি ও দুষ্কৃতি অনুসারে সুখ-দুঃখ ভোগ করবার জন্য জন্ম-জন্মান্তর পরিগ্রহ করতে হয়। কর্মফল অনুসারেই জীবনের এত প্রভেদ হয়ে থাকে। … সেই জন্যই লোকে নানা প্রকার আকৃতি, অবস্থা এবং কর্মফলের অধীন হয়ে নানারকম ঐশ্বর্য ও সুখ-দুঃখ ভোগ করে থাকে।… জীবের কর্মানুসারে ……তার এই জগতেই ভোগ হয়ে থাকে। নরক ও স্বর্গ পৃথক স্থানে নয়।”
“মনস্থির করে ভক্তিভাবে আত্মচৈতন্য বিশ্বচৈতন্যের সঙ্গে যোগ করাই ধর্ম এবং সেই সংযোগের পথই ধর্মপথ।”
“আত্মাকে জানলেই পরমাত্মাকে জানা যায় ।…… পরমাত্মাকে জানলে ভগবান বা ঈশ্বরকে জানা যায়।”
” সমদর্শী না হলে যখন সিদ্ধি হয় না, কলহ দ্বেষ যখন জগতের পাপ প্রসবিতা, তখন ধর্ম-কলহ বা সাম্প্রদায়িক ‘ধর্ম’ যে একান্ত নিন্দনীয়, তার আর সন্দেহ কী? ঈশ্বর সকলের সমান। তাঁর কাছে জাতিগত বা সম্প্রদায়গত ধর্ম নেই ; …. প্রকার ভেদ নেই। যে তাঁকে এক মনে ভক্তিভরে ডাকে তিনি তার।”
“একমাত্র জ্ঞান-স্বরূপই ‘আমি’। ‘আমি’ দেহ হতে ভিন্ন, ‘আমি’ এই মনও নই, জীব (অহং)-ও নই। “আমি” নিত্য স্বপ্রকাশ অনন্ত, অমর আত্মা।”
” যে রকম আকাশ ঘটাদি বস্তুর ভেতরে ও বাইরে রে অবস্থিত সেই রকম পরমাত্মা সমস্ত বস্তুর ভেতরে ও বাইরে বিদ্যমান ।”
“অখণ্ড চৈতন্যস্বরূপ আত্মা বা ব্রহ্ম।….তোমার আত্মা আমার আত্মা একই। যেমন একখানি কাগজের ওপর নানাপ্রকার চিত্র আঁকা থাকলেও ওই ভিন্ন ভিন্ন চিত্রের আধার একমাত্র কাগজটিই, সেই রকম এই জগতে সকলের আত্মা এক।”
“এই জগতে যতপ্রকার রূপ আছে সকলই ঈশ্বরের থেকে উৎপন্ন হয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রকাশিত হয়েছে।”
” ইন্দ্রিয় আসক্তির অপেক্ষা স্বার্থপরতা চিত্তশুদ্ধির গুরুতর বিঘ্ন।”
“আত্মা সর্বগত হয়েও সর্বত্র প্রকাশিত হন না, কেবল নির্মল বুদ্ধিতেই (শুদ্ধবোধেই প্রকাশিত হন।”
“পরমব্রহ্ম থেকে অসংখ্য জীবরাশি অনবরত নির্গত হচ্ছে। জীবসমূহ বাসনারূপ শরীরাদি ধারণ করে, আশ-পাশ দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পক্ষীগণের বৃক্ষ থেকে বৃক্ষান্তরে গমনের ন্যায় এক শরীর থেকে অন্য শরীরে গমন করছে। …জীব স্বীয় বাসনাবলেই আবদ্ধ ও বিকাশ হয়ে এই প্রকার অবস্থান করছে। …দেহপরম্পরা ভোগ করে যথাকালে আবার সেই পরমপদে লীন হচ্ছে। …কেউ কেউ জীবন্মুক্ত হয়ে পরম কল্যাণভাজন (লোকশিক্ষক) রূপে বিচরণ করছে।”
” শুধু মনুষ্যত্ব লাভ হলেও মুক্তি ইচ্ছা সহজে হয় না।…..বাসনা ত্যাগই মুক্তির প্রধান উপায়।”
“সগুণ ঈশ্বর চিন্তা করতে করতে চিত্ত যত নির্মল হবে, ততই আত্মার উজ্জ্বলতা অন্তরে উদিত হবে।”