Ramendra Sundar Tribedi quotes in Bengali – রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর চিরন্তন বাণী সমুহ । সমস্ত বাণী বাংলায় জানুন।
“শিক্ষার কথা যদি বলা হয় তাহলে আমরা সকলেই শুধুমাত্র একটি শিক্ষাই জেনে থাকি। সেই শিক্ষার অর্থ হলো মনুষ্যত্বের বিকাশ, আনন্দ ও সুপুষ্ট।”
“বেদান্ত বলেন – ‘ততো না বিজুগুপ্সাতে’ সংসার হইতে ভয়ও নাই, লজ্জাও নাই, জুগুপ্সার কোন কারণেই নাই। বৌদ্ধ বলে – সংসার হেয়, ইহা হইতে জুগুপ্সার হেতু আছে। শয়তান বা মার ভয় দেখাইয়া থাকেন, আবার বিষয়াশক্তি দ্বারা প্রলোভিত করেন। তাহার অনুচরেরা বুদ্ধকে ও খ্রিস্টকে ভীষণ মূর্তি দেখাইয়া লড়াই করিতে আসিয়াছিল। আবার ভোগের সামগ্রী দেখাইয়া প্রলোভীত করিয়াছিল। কৃষ্টিয় গীর্জায় সেই ভয়ের দিকটা খুব ভয়ানক রূপে বিচিত্র করা হইয়াছে। বৌদ্ধভাবাভীভূত হিন্দুর মন্দিরে বিষয়াশক্তির যে মূর্তি অতি জঘন্য, অতি হেয়, তাহাই দেখান হইয়াছে। ভব চক্রের চিত্রের তৃষ্ণার পরবর্তী ‘স্পর্শ’ বা বিষয়ভোগ নামে নিদানের চিত্রে আলিঙ্গনবদ্ধ নরমিথুনের যে চিত্র পাওয়া যায়, তাহাকেই ফলাইয়া শেষ পর্যন্ত এই অশ্লীল মূর্তিতে পরিণত করা গিয়াছে, এইরূপ অনুমান করা যাইতে পারে”
“দুঃখের অনুভূতি যাহার তীক্ষ্ণ, তাহার নাম কবি, কাজেই মোটের ওপর কবির সুখের অনুভূতিও প্রবল”
“বর্তমান এই শক্তি ভুবনে বিভিন্ন ধরনের মূর্তিতে পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু এই শক্তি অপচয় মুখী ব্যতীত আর কিছু নহে”
“যেখানে অভাবের শেষ, সেইখানে জীবন প্রবাহ রুদ্ধ, অভাবের পরম্পরাতেই জিবলীলা। বাঁচার জন্য যে চাহিদা, সেটি সুখের চাহিদা নয়, ওটি দুঃখ থেকে ছাড় পাওয়ার ইচ্ছা, তবে ছাড় কিন্তু হয় না। মানব জীবন সবসময় দুঃখের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত , কারণ জীবন, জীবনই”
“জ্ঞানের উদয় হইলেই বুঝিবো অখিল প্রপঞ্চে স্রষ্ঠা। বিধাতা নিয়ন্তা আমি সর্বঙ্গ সর্বশক্তিমান অদ্বিতীয় ব্রহ্মা, অন্য ব্রহ্ম নাই। কে বলিল, আমি সুখদুঃখ ভোগী অল্প শক্তির জীবমাত্র? এই জগত যখন আমারই কল্পনা, উহা যখন আমারই প্রত্যয়, এই স্থুল দেহ, এই জন্ম-জরা-মরণ, এই সুখ-দুঃখ, এই সমস্তই তখন আমারই কল্পনা, বস্তুত আমি এই সকল হইতে মুক্ত। এইটুকু জানারই নাম অধিবিদ্যার ধ্বংস – তাহার পারিভাষিক নাম মুক্তি।….. মুক্তের কামনা নাই, কেন না – তাহার নিকট ইহকাল ও পরকাল অর্থ শূন্য”
“মানুষের সৌন্দর্যানুরাগও এইরূপ একটা নেশা, ইহার কোন উপকার নেই, বরং অন্য নেশার মত সময়ে জীবনের অপকার করে”
“আমরা যখন ‘রাজনীতি’ শব্দটাকে গ্রীক ভাষা থেকে পাওয়া ‘পলিটিক্স’ শব্দটার অনুবাদ হিসেবে ব্যবহার করি, তখন শব্দটা আমরা নিন্দা বা হিংসার ভাষা হিসেবে ব্যবহার করি না। মানুষ্য সমাজের একটা প্রয়োজনীয় জ্ঞান হিসেবে ‘রাজনীতি’ – কে দেখা হয়ে থাকে । তখন আমরা অ্যারিস্টটলের সঙ্গে একমত হয় যে ‘আনথ্রপন পলিটিকন জুঅন'”
“মানুষ পল্লীবাসী জীব। পল্লী শব্দটা এখানে গ্রিক ‘পলিস’ শব্দের পরিভাষা, তার মানে গ্রাম, গোষ্ঠী, সমাজ, নগর ইত্যাদি মিলেমিশে থাকার যে কোন ব্যাবস্থা। ….. গ্রামেতে বসবাস করতে হলে গার্মবৃন্দদের জন্য কিছু সমস্ত ব্যক্তির সহমত যোগ্য আচরনের নিয়ম থাকা দরকার হয়। প্রয়োজন বোধে সময় অনুসারে সেগুলো পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে নিয়ম-শৃঙ্খলা বিহীন কোন গ্রাম বা পল্লী সম্ভব হয় না। পল্লীর যদি কোন নিয়ম শৃঙ্খলা না থাকে তাহলে মানুষের মানুষত্বের হানি হয়”
“অনেক সময় যেই বিষয় বোঝা যায়, তার চেয়ে তার চেয়ে যেই বিষয় বজায় যায় না, সেই বিষয়েই আনন্দ বেশি হয়ে থাকে”