স্বামী নারায়ণ গুরুর ১৮৫৬ সালের আগস্ট মাসে ভারতের কেরালা রাজ্যের জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি এক ঈশ্বরের বিশ্বাস করে বলেছিলেন আমরা সকলেই এক ঈশ্বরের তৈরি মানব। তিনি একদিকে ছিলেন যেমন সাধক অপরদিকে ছিলেন তিনি একজন দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। অবশেষে তিনি ১৯২৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৭২ বছর বয়সী ভারতের কেরালা রাজ্যে মারা যান। এনার কিছু বানী নিচে উল্লেখ করা হল-
“নিজের আনন্দার্থে যে সক্রিয়তা তা যেন অপরের আনন্দ লাভেও সহায়তা করে, লক্ষ্য রাখতে হবে।”
“শিক্ষা হল জীবজগতের প্রগতিকামী প্রত্যেক মানুষের জ্ঞানার্জনের মাধ্যম। তাই নরনারী নির্বিশেষে সকলেরই প্রাথমিক কর্তব্য শিক্ষা লাভ।। শিক্ষা হোক সর্বজনীন কল্যাণধর্মী”
“সমুদ্রব্ৎ আত্মচৈতন্যের মাঝে পরমাপ্রকৃতি যেন জলরাশি। জীব দেহগুলি তার ফেনা আর জীবের ‘আমি’ ‘আমি’ ভাবগুলি তার তরঙ্গমালা।”
“পূজার জন্য সব সময়েই বিগ্রহের প্রয়োজন হয় না ভগবানকে সর্বত্রই পূজা করা যায়। আধ্যাত্মিক আদর্শের আগ্রহটিই আসল। সত্য, প্রেম ও কর্তব্যপরায়ণতার আদর্শ দেবালয়গুলিতে প্রচারিত হোক, সকলের জীবনে এইগুলিই পূজার উপকরণ হোক।”
“আত্মচৈতন্যের স্বরূপানন্দ আস্বাদন করার জন্য একের ইচ্ছাতেই বহুর প্রকাশ। ইন্দ্ৰিয়সমূহ, চিত্তবৃত্তিসমূহ এবং জীবদেহ মাধ্যমে সেই আনন্দই ভোগ করতে চায় ভোক্তারূপী জীবাত্মাও। সেই জন্যই বহুমুখী জাগতিক প্রকাশে বহমান এই ‘আনন্দাস্বাদন’ লীলার কোনো অন্ত থাকতে পারে না। যতকাল জীবরূপী ভোক্তার নিজেকে ‘অহং স্বাতন্ত্র্য বোধে’ আলাদা বলে মনে করে, তাকে বারবার সেই আকাঙ্খা পূরণ করতে দেহ থেকে দেহান্তরে জন্মগ্রহণ করতে হয়।”
“সমুদ্রে যেমন একের পর এক অবিরাম পৃথক পৃথক তরঙ্গ ওঠে, সৃষ্ট হয়, আবার লয় পায়, তেমনই অনাদি শক্তিস্পন্দনে অনাদি চৈতন্য সমুদ্রে স্বতঃস্ফূর্ত একের পর এক প্রকাশ ঘটে চলেছে।”
“অদ্বিতীয় পরমাত্মাকে কখনো নিজের থেকে আলাদাভাবে জানা যেতে পারে না। কারণ তাঁর বাইরে কিছু নেইই। সুতরাং তাঁকে শুধুমাত্র (দ্বন্দ্বাতীত) আত্মবোধের অভিন্নতায় উপলব্ধি করা যায়।”
“প্রকৃতির ঘূণাবর্তে পড়ে প্রতিটি কর্মের জন্যই এমনকি সু-কর্ম করলেও সেই ফল ভোগের জন্য জীবকে বারবার ঘুরে আসতে হয় জন্মান্তরে। একমাত্র ‘অকর্তা’ বোধ এই কর্মবিকার থেকে উদ্ধার করে দ্বন্দ্বাতীত আত্মবোধে উত্তরণ ঘটাতে পারে। তাই আসল প্রয়োজন প্রকৃত আত্মজ্ঞানের।”