বলেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাণী সমুহ

বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ঠাকুর পরিবারের একজন সন্তান। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন তিনার কাকু। তিনি ছিলেন একদিকে সাহিত্যিক এবং অপরদিকে কবি। তিনার কয়েকটি অমৃত বাণী নিচে উল্লেখ করা হলো।

quotes in bengali
Image by Pexles

“শৈব সাহিত্যর ভালোবাসা আর শক্তিতে গুন ও মহত্বের পাঠ”

“বৈষ্ণব মন নদী তীরে, বৃক্ষের তলদেশে প্রকৃতির ছায়া যুক্ত নির্জন শ্যামল বনানী, মায়ের আদরের ও বন্ধুর ভালোবাসায়, সুন্দরী প্রিয়তমার সঙ্গে মধুর সংযোগ চুপিসারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়”

“বিবস্ত্রর চারিদিকে একটা জ্বলন্ত সৌন্দর্য আবিষ্ট করিয়া থাকে, সেই সৌন্দর্য জ্বলন্তর মধ্যে রূপের জীবাত্মা শ্রেণীবদ্ধ। বিবস্ত্রতার রূপের সোনা মিলন। বিবস্ত্রতা পূর্ণ সুরূপা।”

“ভালো কাজের দিন আমাদের মঙ্গলঘড়া শুধুমাত্র বাইরের সৌন্দর্য, কিন্তু সেটি চ্যুতপল্লব মনোরম হইয়া অনুষ্ঠান ক্ষেত্রে আমাদের একটি কল্যাণে প্রবৃত্তি প্রকাশিত করে।”

“অসহায়তার মধ্যেই আনন্দের গোপন অবস্থান”

“আমাদের সকলের কোন ধরনের অন্ধবিশ্বাস হওয়া উচিত নয়, কারণ অন্ধবিশ্বাস ভালবাসার প্রতিকূল”

“বরণ আমাদের একটি বহুকাল প্রচলিত চিরাচরিত অনুষ্ঠান। যা হোক আমরা কিন্তু ভালবাসি, শ্রদ্ধা করে থাকি; যার ভালো ইচ্ছা করি, সেটিকে বরণ করিবার নিয়ম অনেককাল থেকেই চালু রয়েছে”

“অত্যাধিক ক্ষমতায় ইউরোপীয় রাজগুণ আমাদের সকলের রাজাসাহেব রঞ্জনে”

“ক্রমবিকাশ নহীলে সুন্দরতা বিফল”

“অভিলাষ আনন্দে ও দুর্দশায় একমাত্র আপন সঙ্গী”

“সাঁঝ আছে জননীর ন্যায় বিশ্ব-ভুবনকে ভালোবাসা ঢেলে দিয়ে বিদায় নেয়। অন্তরের অতুলনীয় ভালোবাসায় সাঁঝ হয়ে ওঠে সুন্দর, বিশ্বভূবনকে আপন করিয়াই তাহার একমাত্র সন্তুষ্টি।

“ভাষা সাহিত্য অকৃত্রিম পদ্ধতিতে আমাদের হৃদয়ের উষ্ণতায় আপনি ব্যক্ত হইয়া উঠে, তাহার প্রতিটি বাক্যের সঙ্গে আমাদের জীবন ও যৌবনের যেমন এক চিরকাল ধরিয়া দুর্জ্ঞেয় চক্ষু থাকিয়া যায়, সম্পূর্ণ ইংরেজি ভাষা সাহিত্যের সঙ্গে আমাদের জীবন যৌবণের সেই ধরনের ধারাবাহিক যুগ সম্পাদিত হওয়া সম্ভবপর নয়; কারণ ইংরেজি ভাষা সাহিত্য আমাদের স্বজাতিপ্রীতি বিকাশ ও উন্মেষের ফল মোটেও নয়”

“মানুষের জীবন-আত্মার অযৌক্তিক কারণ অনেক সময় অতি বিহ্বল তৃপ্তিদায়ক”

“মহিলারা কোনো যুগে সম্পূর্ণরূপে পুরুষ বা পুরুষরাও সম্পূর্ণভাবে কোনো যুগে মহিলা হইতেই পারে না। মানুষ্য জাতির সম্পুর্ণতা সাধনের জন্য উভয়েরই আবশ্যক”

“শিশু যেমন মাতৃ বক্ষঃস্থলের ভালবাসার পোষণ সিদ্ধি করে, সেই লাবণ্য আপনার দিকে বিশেষ সৌন্দর্যে টানিয়া ধরিয়া সংসারের কাজের ক্ষেত্রে নারীকে পুরুষের পরস্পর বিরোধী হইতেই দেয় না”

“বৈষ্ণবেরা কাঠিন্যকে কোমল রসে গোলাইয়া ফেলিতে চায়, শাক্ত কোমলতার অন্তরে কঠিনতার প্রতিষ্ঠা করে”

“শরৎ সুন্দরী স্নেহময়ী গৃহিনী – প্রিয়জনের দর্শন বিরহেও নীরবে ম্লান মুখে কর্তব্য সাধন করিয়া চলিয়াছে। তাহার রাগ নাই, ধীর স্বভাব, স্নেহ গঠিত হৃদয়। বসন্ত সুন্দরী কিছু উতলা প্রকৃতি”

“বেহিসাব কাজ করাই মেঘদূত নিঃসৃত বাণীর সমতুল্য”

“কবি সত্য সত্য অনুভব করিয়া বলেন

“কবি সত্য সত্য অনুধাবন করে উল্লেখ করেন, এইজন্য তাহার কথার এত গুরুত্ব। সেন্টিমেন্টালদিগের ভাব অনুভবও অনেকটা কাল্পনিক বিষয়। এইজন্য তাহা নির্জীব অনর্থপ্রসূ। কল্পনা সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত না হইলে কবিতা বাহির হয় না। কল্পনাও যখন কাল্পনিক হইয়া দাঁড়ায় তখন রোগের উৎপত্তি সন্দেহ নাই। সেন্টিমেন্টালের অবস্থা রোগের স্বভাবের নয়, বিকারের, কবি ফজল প্রকৃতির, সেন্টিমেন্টাল বিকৃতির, কবি সরল প্রেমের, সেন্টিমেন্টাল রুগ্ন প্রেমাভিনয়ের”

“নগ্নতার মধ্যে স্বভাবের ফুর্তি হয়, এইজন্যই তাহার সৌন্দর্য কূলে কূলে নগ্ন জ্যোৎস্নাকে ছাঁকিয়া পর্দার আড়ালে উপভোগ করা যায় না। পূর্ণ জ্যোৎস্নায় ঝাঁপাইয়া পড়িতে হইবে। নগ্ন সৌন্দর্য নিজস্ব প্রকাশ”

“গোধূলিতে মন খুলিয়া তেমন তৃপ্তি নাই- সন্ধ্যার মত গোধূলি আমাদের সুখ-দুঃখ বুঝে না”

“কবি কল্পনার চালক দাস নহেন”

“সাহিত্য হল জীবনের এক সমালোচনা”

“বসন্তে বিরহ সুখান্বেষী – সুখের ভোগী খুঁজে; বর্ষার বিরহ দুঃখের সহভাগী চাই”

“লজ্জা সংযমের সুশীলা সহচর”

“রূপের প্রশংসায় কোন রমেনির অন্তর না উথলিয়া ওঠে”

“যে গৃহসজ্জার পারিপার্থে গৃহিনীর শুচিতা প্রকাশ পায়, যে ব্যঞ্জনরন্ধনে তাহার কোনরূপ প্রযত্ন বা উপদেশ থাকে, যে তাম্বুল রচনায় তাহার শুভ আঙ্গুলী স্পর্শ মধু সঞ্চার করে, তাহাই সর্বাপেক্ষা চিত্তহারী এবং তাহাতেই আমাদের সার্থকতা

“সাহিত্য জীবনকে এবং জীবন সাহিত্যকে প্রতিদিন নিঃশব্দে গড়িয়া তুলিতেছে”

“দীর্ঘ জীবনের মধ্যে মধ্যে শূন্যতাই তাহার ভাবের একাতা বজায় রাখিয়াছে, শূন্যতার জন্য আমরা জীবনের বৈচিত্র উপভোগ করিতে সমর্থ হয়”

“সৌন্দর্যের প্রধান শক্তি বাইরের প্রকৃতিতে, মানুষের হৃদয়ে, প্রেমে, আশায়, স্বপ্নে, সব জায়গায় ছায়া ফেলিয়াছে। কবি এই চরাচরপ্লাবি সৌন্দর্য রহস্য নিমগ্ন হইয়া দেখিতেছেন যে, এই সমস্তই সেই মহাসৌন্দর্যে ওতপ্রোত। এবং এই সৌন্দর্য অবলম্বন করিয়ায় মানবের অন্তরের সহিত প্রকৃতির অন্তরের অনির্বচনীয় যোগসূত্র নিবদ্ধ রহিয়াছে”

“অনন্তের ছায়ায় গানের প্রাণ”

“নীতির মধ্যে এই যে দুটা অংশ আছে জ্ঞান ও ভাব। তাহার মধ্যে জ্ঞানটা সর্ব পরিচিত ও পুরাতন। ভাবটা কাহারো আছে কাহারো নাই, কাহারো বেশি, কাহারো কম। এবং ভাব কখনই পুরাতন হয় না। পুরাতন জ্ঞানের কথা কে যতবার পুনরুক্ত করিবে, ততই সে পুরাতনতর জীর্ণতর হইয়া উঠিবে- কিন্তু ভাবকে যতই অনুভব করাইবে, ততই সে উজ্জ্বলতর হইয়া উঠিরে”

Leave a Reply