অজয় কুমার ঘোষ ১৯০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ইনি ছিলেন একজন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং রাজনৈতিক নেতা। অবশেষে ইনি ১৯৬২ সালের জানুয়ারি মাসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এনার কিছু উপদেশ নিতে উল্লেখ করা হলো।
“লেখকের সমকালীন জীবন, দেশ-বিদেশের ঐতিহ্য আয়ত্তীকরণ শক্তি ও তার সঙ্গে লেখকের ব্যক্তিগত জন্ম ও পরিবারগত জী—সব কিছুর ঘাত-প্রতিঘাতেই লেখকের সমাজচেতনা তথা জীবন-চেতনা কিভাবে কতখানি দ্বান্দ্বিক প্রক্রিয়ায় গড়ে উঠবে তার ওপরেই বিষয়বস্তু ও আঙ্গিকের বিশেষত্ব নির্ভর করে। স্টাইল হলো লেখকের গভীর গহন ব্যক্তি-চৈতন্যের তথা বিশেষ যুগের সংস্কৃতির বাঙ্ময় প্রকাশ এবং ভাষার মধ্যে দিয়ে ভাষাকে অতিক্রম করে যে গুণ সাহিত্যকে সত্যিকার সাহিত্য করে তোলে তা-ই স্টাইল। জীন-এর মধ্যে যেমন কোনো প্রজাতির সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে, তেমনি স্টাইলের মধ্যেও ধরা পড়ে কোনো দেশের সংস্কৃতিগত বৈশিষ্ট্য ও সাহিত্য সৃষ্টির রহস্য।”
“দর্শনশাস্ত্রের মতো সাহিত্যশিল্প যদি সমস্ত জগৎ ও জীবনকে এক অখণ্ড ঐক্য দৃষ্টিতে দেখতে চায়, তবু এদের মধ্যে পার্থক্যও আছে। দর্শন জগৎ ও জীবনকে কতকগুলি সাধারণ প্রত্যয় বা concepts-এর মধ্যে আনতে চায়, কিন্তু আর্ট তাকে দেখতে চায় নানা রূপের মধ্যে যেমন করে সূর্যের আলো ধরা পড়ে এক ফোঁটা জলের ওপর, ধানের শিষের শিশির বিন্দুর ওপর অথবা জীবনের আলো অন্ধকার যেমন করে ধরা পড়ে মানুষের চোখে মুখের হাসিকান্নার আলো ছায়ায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে শিল্প শুধু এ সমস্তের বর্ণনামাত্র দেয় না, তা জীবনের সার সত্যকেই তুলে ধরে।”