শ্রীমৎ দয়ালদাস অবধূত ১৮৩৪ সালে ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। উপাসনার মাধ্যমে ঈশ্বর উপলব্ধির দ্বারা কিভাবে স্বর্গবাসী হওয়া যায়, সেই সম্পর্কে তিনি মানুষকে উপদেশ দিতেন। অবশেষে ইনি ১৮৯৪ সালে মারা যান। ইনার কিছু বাণী নিচে উল্লেখ করা হলো।-
“বিচারশীল হও, আর ধ্যান—মননের অভ্যাস দ্বারা মনকে করে তোল অন্তর্মুখীন। তার ফলে এই দেহটি সম্বন্ধে মনে হবে, এটি ইহজীবনের এক অস্থায়ী আবাস ছাড়া আর কিছু নয়। এই চিন্তা জাগলে দেহের প্রতি মমত্ব হ্রাস পায়, সঙ্গে সঙ্গে এই দেহ সংশ্লিষ্ট বিত্তবৈভব ও বিলাস উপকরণের বাসনাও শিথিল হয়ে পড়ে।”
” দুঃখের আঘাত, মৃত্যুর আঘাত, সব মানুষের জীবনে আসবেই আসবে। দেহ মাত্রই অনিত্য প্রপঞ্চ। যা অনিত্য তার ধ্বংস তো ‘এক সময় হবেই। এজন্য আমাদের আগে থেকেই তৈরি থাকা উচিত। কেবল পরম সত্তা ভগবানই সত্য।”
“ভগবানে অনুরাগ এলে তা কখনো নষ্ট হয় না। তাঁকে লাভ করলে সেই সম্ভোগ হয়ে থাকে, যা অক্ষয়, অব্যয়।”
“যেখানে সাম্প্রদায়িক পরিচয়, সেখানেই অভিমান । ….. ‘সৎ’ সন্ন্যাসী মাত্রই নিজেকে জানেন (অদ্বিতীয় ভগবানের) সেবক, দাসরূপে।”
“বাসনা আর মায়া মমতার ফলে চিত্তে মল জমে যায়। বৈরাগ্য অবলম্বন করো, নিত্য ও অনিত্য বস্তুর বিচার করো, চিত্তের মল অপসারণ করো, সচ্চিদানন্দময় পরমপুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করো। তাহলে আর বিচ্ছেদের দুঃখশোক ভোগ করতে হবে না।”
“ভজন করা আমার কাজ, ভোজন দেওয়া প্রভুর কাজ। তিনি কি তাঁর শরণাগত জীবকে ভুলে থাকতে পারেন?…..তিনিই পালন করেন।”
“শুধু বেদান্ত শ্রবণে আত্মসাক্ষাৎকার ত্বরান্বিত হয় না। এজন্য চাই নিত্য অভ্যাস, নিদিধ্যাসন । চিত্তমল দূর হলে পরম চৈতন্যময় আত্মসূর্য ভাস্কর হয়ে ওঠেন, সাধকের সত্তায়।”
“বিপদের মুখে অধীর হবে কেন? ভগবানকে ডাকো, তিনি অবশ্যই কৃপা করবেন।”
“দ্বৈত ভাবের ফলেই মৃত্যুকে মানুষ ভয় পায়। কিন্তু আসলে দ্বৈত নেই। … অদ্বৈত ব্রহ্মের চৈতন্যময় প্রকাশ অনুভব করলে অজ্ঞানজনিত জগৎপ্রপঞ্চ স্বতঃই বিলীন হয়ে যাবে।”