Premananda inspirational quotes | প্রেমানন্দের ৯টি অনুপ্রেরণমূলক বাণী

শ্রীমৎ স্বামী প্রেমানন্দ ১৮৬১ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির হুগলি জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ইনি শ্রীরামকৃষ্ণের একজন বিশেষ শিষ্য ছিলেন। ইনি অদ্বৈত বেদান্তে বিশ্বাসী একজন সাধক ছিলেন। ইনি ১৯৮৬ সালে সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করার পর স্বামী প্রেমানন্দ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন, এর আগে এনার নাম ছিল বাবুরাম মহারাজ। অবশেষে ১৯১৮ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে শেষ জীবন ত্যাগ করেছিলেন। এনার কিছু উপদেশ নীচে উল্লেখ করা হলো।- 

“উপলব্ধি আর তর্কের দ্বারা বোঝায় ঢের প্রভেদ—প্রত্যক্ষ দেখা ও বই পড়ে জানা অনেক তফাত।”

“নিজের নিজের চরিত্র তৈরী করতে হবে। নিজেকে ‘ভগবানের দাস’ মনে করে সেবা করতে হবে।—মানুষ থেকে দেবতা হতে হবে।

“খুব বড় বড় কাজ করে যদি “অহং” ভাব না কমে, তার চেয়ে ছোট ছোট কাজ করাই ভালো। কর্মেই বন্ধন আবার কর্মেই মুক্তি। …’উদ্দেশ্য’ অর্থাৎ চিত্তশুদ্ধির দিকে লক্ষ্য রাখলে নাম-যশ লোকনিন্দার দিকে আর দৃষ্টি থাকে না, কাজটাও বেশ সুসম্পন্ন হয়। দীর্ঘকাল ভালো কাজ করতে করতে মনে শুভ সংস্কার বসে যায়।  এই ‘অহং’ই সকল অনর্থের মূল। একে নাশ করতে হবে, তা না করে ‘অহং’কে পুষছি, কাজেই তার দংশনে ছট্‌ ফট্ করতে হচ্ছে, তবুও তাকে বুকে করে আঁকড়ে ধরে আছি। …অভিমান ত্যাগ করতে হবে। এই বৃথা অহংকারই জীবকে ভগবানের থেকে পৃথক করে রেখেছে। প্রেমই পরম পুরুষার্থ। … প্রাণ ঢেলে ভালোবাসা চাই আদর্শকে।”

“সংসারে গৃহস্থেরা খাটে পরিবারের স্বার্থে; তাই তাদের কাজে আরও বন্ধন বাড়ে। তারা যদি ওই সেবাই ভগবৎ-বুদ্ধিতে করে, তাই থেকেই ধীরে ধীরে তাদের বন্ধন খসে যায় ।”

“প্রাক্তন পুরুষকারই দৈব। সংসারে কাম কাঞ্চনে মন ছড়িয়ে থাকে। মনকে গুটোতে না দেওয়াই হচ্ছে ‘অবিদ্যা’র কাজ। এই মনকে গুটিয়ে এক করাই সাধন। মনের কোণে এতটুকু বাসনা থাকলে মন ভগবানে তন্ময় হয় না। যে বাসনা মনের বাঁধন খোলবার সাহায্য করে তা শুভ। ম্যাদাটেভাবে কাজ হয় না। চাই খুব রোক্। ভয়-ভাবনা দূর করে দেবে। ভাববে ‘আমরা ভগবানের সন্তান’, তাহলে দুর্বলতা আসতে অবসর পারে না। এই সব ভাব জাগবে, তবেই তো ‘অবিদ্যা’ দূর হয়ে যাবে। মনকে জয় করতে পারলেই আত্মারাম হওয়া যায়।”

“মানুষের কাছে ফাঁকি চলে কিন্তু ভগবান অন্তর্যামী, তাঁর কাছে ফাঁকি চলে না। …ঈশ্বর কোনো নিয়মের অধীন নয় যে, শতবার নাক টিপেছি কিংবা লক্ষ্যবার কর গুণেছি, আর তিনি উড়ে আসবেন। চাই হৃদয়, ব্যাকুলতা, আন্তরিকতা।”

” ‘আমার বাড়ি, আমার ঘর, আমার সন্তান’ অথচ চোখ বুজলেই কে কোথায় থাকে তার ঠিক নেই, গৃহস্থেরা সবই ঠিক করছে, কেবল মন-মুখ এক করে ভেতর থেকে ‘ না করে যদি ‘তুমি – তোমার’ অভ্যাস করে, তা হলেই অনাসক্ত হয়ে যায়, সিদ্ধ হয়ে যায়।”

“নিষ্কাম কর্মের ছোট-বড় নেই। চিত্তশুদ্ধির জন্যই তো কাজ। ফলের দিকে দৃকপাত না করে কেবল কাজ করে যাও। মনকে খোঁচাতে হবে, ঠিক ঠিক নিঃস্বার্থভাবে কাজ হচ্ছে কি না, দ্বেষ, হিংসা, আসক্তি, অপবিত্রভাব ক্রমে ক্রমে দূর হচ্ছে কি না। আসক্তিই বন্ধন, পবিত্রতাই শক্তি।”

“সর্বক্ষণ তো ধ্যান-জপ করা যায় না, – অন্ততঃ যতক্ষণ বই পড়া যায়, ততক্ষণ তাঁর ভাবে থাকা যায়। তাঁর দয়া হলে অনন্ত জ্ঞানের স্ফুরণ হয়। ভালোবাসা দ্বারা জগৎকে আপনার করে নিতে হবে।”

Leave a Reply