জগদ্বন্ধুর ১৫টির বেশি বিশেষ বাণী

জগদ্বন্ধু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়া গ্রামে 1971 সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি একদিকে যেমন ধর্মগুরু ছিলেন তেমনি অপরদিকে ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক ও কুসংস্কার বিরোধী, সেই সঙ্গে তিনি একজন তৎকালীন লেখকও ছিলেন।

তবে অবশেষে তিনি 1971 সালের সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ৫০ বছর বয়সে বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি জীবিত কালে এমন কিছু কথা বলে গিয়েছিলেন, যা এখনো পর্যন্ত মানুষের মুখে বাণী হিসেবে প্রচলিত রয়েছে। নিচে এনার কিছু বাণী উল্লেখ করা হলো।

Jagat Bandhu quotes in bengali
Photo by pexels.com

“অশীতি লক্ষ প্রজাপতিতে ভ্রমণের পর মানব জন্ম পাওয়া যায়। বস্ত্রান্তর গ্রহণের মত জীব বা আত্মা পুনঃপুনঃ দেহত্যাগ ও দেহান্তর গ্রহণ করে থাকে।… সুতরাং কেউই কারোর নয়। কেবল প্রোপঞ্চ বা মায়ার ছলনা মাত্র। এই মায়া হতেই কৃষ্ণ ধ্বনে বঞ্চিত হতে হয়। কিঞ্চিৎ মাত্র মায়া থাকতে স্বরূপ দর্শন হয় না। সুতরাং সাবধান।”

“জীব হিংসায় মানুষের উন্নতি কোনদিনই হয় না। হিংসাকারীর পরিণাম কষ্ট। অহিংসায় সিংহবিক্রমে চলো।… ধর্মে জয়যুক্ত হও।”

“অনেক মানুষ তোমাদের জটিল পথে নিতে চাইবে; কষ্ট দিতে চাইবে। তাতে ভীত হইয়ো না।… যেখানে সেখানে যাবে না। ওতে চিত্ত মিলন হয়। খলের সঙ্গে বেশি কথা বলতে নেই, ব্যবহারও না, লক্ষণে মানুষ চিনে নাও। সেইরূপ ব্যবহার করো। যার যে ভাব সে তাই চায়। নিরভিমান হইয়ো।”

“আলস্য চিরত্যাগ করে মহাপ্রেমে মহাশুচি পবিত্রতায় জগতের পথ করো।… বর্ণ বিচার করো না। নারী, পুরুষ, ছোট, বড় বেছো না।”

“মন তার স্বভাবে চঞ্চলই হয়, তাই তাকে কখনো আশ্রয় দেওয়া চলবে না। তোমরা সরল মনের হও। মনের ময়লাকে দূর করো। নিজের মনকে সব সময় পবিত্র রাখো। নিজের প্রাণ দিয়েও সত্য রক্ষা করো।”

“কারোর প্রশংসায় উত্তেজিত আহলাদিত ও অহংকৃত এবং নিন্দাই নিরুৎসাহিত ও দুঃখিত হওয়া উচিত না।”

“নিজের বিবেকই ধর্মা আত্মবিবেকে চলো। নিজ বিচার বুদ্ধিতে চলো। বিচারহীন বিশ্বাসে মানুষ বঞ্চিত হয়।… দেশ,কাল, পাত্র ও অবস্থা বিবেচনা করে চলো। হুজুগে মেতো না। ধর্ম ভিন্ন সব মিথ্যা।”

“শ্রীকৃষ্ণের সিও শক্তির নাম হলাদিনীশক্তি। এই হলাদিনিশক্তিই শ্রীমতি। জপাদি যথা ইচ্ছা সময় হতে পারে। প্রবাসে, অশুচি অবস্থার জপাদি মানসেই হবে।… জপ ও চিন্তা এক সময়েই হবে। মন্ত্রাদিকে অভেদ – বিগ্রহ জ্ঞান করবে, মন্ত্র শক্তির প্রভাবেই বিগ্রহাদী ফুর্তি পাবেন। মন্ত্রাদির প্রয়োগে ভববন্ধন দূর হয়।… রাত্রিকাল উপাসনার সময় ভালো।”

“পাপ- দমন ও অকপট হলেই ‘মানুষ’ হয়। মানুষ্য হলে তার মধ্যে ‘সত্য’ ফুটে ওঠে। পথ নিজেই দেখে, অন্যের দেখাতে হয় না। কর্ম পথ পায়।”

“আত্মশুচি – উদ্ধারন। জগৎসূচি – মহাউদ্ধারণ। পূর্ণ প্রেম। সুচি-বাহ্য অভ্যন্তর।”

“যাদের মনো প্রাণ প্রভুতে সমর্পিত, তাদের অনেক সইতে হয়। তারা স্থির, নিশ্চিত, ধৈর্যশীল, স্থৈর্যশীল , বিনয়ী, গম্ভীর, ধীর নতঃশির ও মৌন হবে। নির্লভ হবে।”

“যা ‘আত্মা’ নয়, আমার নয়। তাকেই আমরা ‘আমি’ ও ‘আমার’ জ্ঞান করে মুগ্ধ হই, শরীর ‘আমি’ নয়, ‘আমরা’ ও নয়, তাতে ‘আমি’ ও ‘আমার’ জ্ঞান ধারণা করি। এতদ্বিধ যা কিছু বিপরীত বুদ্ধি সমস্তই অবিদ্যাছন্নতাহেতু ভ্রমবিশ্বাস।”

“মানুষ-বৈরাগ্য করো। হতাশ হয়ো না। মন সরস করো। ইস্ট-ধ্যান করো।… প্রেমমাধুর্য চিন্তা কর। মাধুর্য রসস্বাদন করো। সাদা আনন্দে রও। নির্ভয়ে বিচরণ করো।”

“সর্বোদার জন্য মনে হর্ষ রাখা উচিত। কিছুতেই ক্ষুন্ন বা দুঃখিত হওয়া উচিত না, সর্বদা স্মরণানন্দে থাকো। আনন্দপূর্ণ-চিত্তে থেকো।

“সমস্তই গোবিন্দের। আমি গোবিন্দের অধীন হয়ে কাজ করছি এবম্বিধজ্ঞানে অহংকার তত্ত্বকে পুনর্মার্জিত করতে হয়।”

” বহু জন্ম পার হয়ে মানব জন্ম হয়। মানবজন্ম পাপ করবার জন্য নয়।”

Leave a Reply