শ্রীমৎ শ্যামা শাস্ত্রী ১৭৬২ সালের এপ্রিল মাসে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে একটি দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই ইনি সংগীতের প্রতি গভীর আকৃষ্ট ছিলেন। তাইতো তিনি একজন বিশিষ্ট কর্ণাটকীয় সংগীত শিল্পী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ইনি ছোটবেলায় ভেঙ্কট সুব্রহ্মণ্য নামে পরিচিত ছিলেন, পরবর্তীকালে শ্যামা শাস্ত্রী বা শ্যামা কৃষ্ণ নামে খ্যাতি অর্জন করে। অবশেষে ইনি ১৮২৭ সালে মারা যান। এনার কিছু বাণী নিচে উল্লেখ করা হল –
“মাতা দূর্গা, ত্রিলোকেশ্বরী, তুমি সর্ব শুভশক্তির উৎস-রূপিনী। হে দেবী ললিতা, দিব্যতার পরম প্রকাশিকা মা তোমারই ইচ্ছায় জগতে কল্যাণ প্রকাশিত হতে পারে। মা আমাকে দয়াপূর্বক পরিচালিত করে নিয়ে চলো সেই অতুলনীয় জ্ঞানমার্গে। মাতা মীনাক্ষী, তোমার প্রতি শরণাগতের সমস্ত পাপ তুমি ধ্বংস করে দাও। শঙ্করী কামাক্ষী, জগন্মাতৃকা কৃপা করো, হে দেবী উমা ত্রাণ করো আমাকে ।”
“ঈশ্বর এক, নানা রূপে নানা ভাবে আমরা তাঁকে দেখে থাকি। যার যেভাবে এবং যে রূপে ডাকতে ভালো লাগে, সে সেইভাবে সেই রূপে ডেকে থাকে।”
“আন্তরিক হলে সব ধর্মের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরকে সাধনা করা সম্ভব। বৈষ্ণব শাক্ত বেদান্তবাদী ব্রহ্মজ্ঞানী-শৈব মুসলমান খ্রিস্টান সকলেই ঈশ্বরের অনুরাগী হতে পারেন। আমি বিশ্বাস করি ধর্মে ধর্মে কোনো পার্থক্য থাকা উচিত নয়।”
“যিনি সাকার আবার তিনি নিরাকার। কখনো তিনি অবয়বশূন্য, কখনো তিনি ভিন্ন মতো, আবার কখনো তিনি অবয়বযুক্ত।”
“সাকার এবং নিরাকার—এই দুটি হল সত্য। এই দুটি সত্যকে আলাদা আলাদা উপলব্ধি করতে হবে।”
“ভাবের ঘরে যার দৃষ্টি না থাকে, তাঁরই সচ্চিদানন্দ অবস্থা হয়, অর্থাৎ সরলভাবে তাঁকে ডাকলে তিনি এসে সাড়া দেন। আত্ম-অহমিকা বিসর্জন দিতে হবে, অহংকার থেকে নিজেকে দূরে সরাতে হবে, তবেই আমরা শুদ্ধচিত্তে তাঁর ধ্যান করতে পারব।”